১৯৫২ থেকে ১৯৭৫ সাল,
সময়টা যে কত নারকীয়-
তা-যাদের ষাটোর্ধ বয়স,
তারাই একমাত্র প্রকৃত অনুভব করার যোগ্যতা রাখেন।
ঐ সময় যে মহীয়ান ত্যাগের আসন গ্রহনের সময়,
যে আসন অলংকৃত করেছে বাংলার ঘরে ঘরে,
বাংলার আপামর জনতার অন্তরে।
রক্তে রক্তাক্ত সন্তানের লাশের পাশে
নিথর নিঃস্তব্দ এক মা।
পাষাণ বুকে ছেলে হারানোর ক্ষত
যেখানে উত্তপ্ত লৌহদন্ডের ছ্যাকা নেহায়েত তুচ্ছ
মায়ের চোখ যেন জলহীন মরুভূমি,
মরিচিকার মতো জলের লহরের ফাঁকে
প্রতিয়মান এক মহা আগ্নেয়গিরির লেলিহান শিখা।
মনে নেই শোকের মাতম,
শুধূ শত্রু হননের প্রতিজ্ঞা।
আর
মা হারা সন্তানের জগৎজয়ী ত্যাগ -
বিশ্বের বুকে স্মরনীয় আজ।
সেদিন
মায়ের মুখের ভাষার জন্য
যে ত্যাগে রাজপথ রক্তবন্যায় রঞ্জিত হয়েছিল,
ঝড়েছিলো বাংলার বাগানের-
ফুটন্ত টগবগে লাল গোলাপ,
সে ত্যাগে ছিলনা কৃত্তিমতা,
সেদিন রক্তবন্যায় নিজেকে ভাঁসাতে-
পিছুহটেনি বাংলা মায়ের সন্তানেরা,
মনে ছিলো না স্বার্থপরতা আর ক্ষমতা লালসা,
শুধু প্রানের ভাষার সম্মান বাঁচাতে
আত্মত্যাগের মালা গলায় পড়ে-
মরে গিয়েও হয়েছেন অমর।
ছালাম রফিক জব্বারসহ নাম না জানা ঝড়া ফুলের সুভাষে
অবনত মস্তকে বিশ্ব মাতোয়ারা।
ত্রিশ লাখ শহীদ আর বীরাঙ্গনার ত্যাগের ফসল
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলার এই দেশ।
সোনার বাংলায় প্রাণ খুলে কথা বলতে, স্বাধীনভাবে চলতে
কতটা রক্ত জড়াতে হয়েছে ,
কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে,
যার রক্ত আর ত্যাগে অর্জিত সোনার বাংলা,
তাঁরা জানে এর মূল্য কত।
আমরা কি তার মূল্য চোকাতে পেরেছি?
“কবর” নাটকের দৃশ্য দেখে গা শিউরে উঠে,
“আগুনের পরশমনি” সিনেমাতে চোখ রাখলেই-
ত্যাগের অতল স্পর্শী গভীরতা অনুভব করি।
কিন্তু তা ক্ষণস্থায়ী,
আদতে আমরা গোগ্রাসে ব্যাস্ত।
স্বাধীন দেশে আজকের মায়েদের চোখে রঙ্গিন চশমা,
নিজের স্বার্থের জন্য রক্ত পিপাসু,
চেয়ার দখলে জনতার ইচ্ছার বলিদান,
তবে কি ত্যাগের সম্মান মুকুট আজ হারাতে বসেছি?
যে মা একদিন সন্তানের কথা না ভেবে দেশের কথা ভাবতো,
সে মা আজ সন্তানের তরে দেশ মাতৃকা জলাঞ্জলি দিচ্ছে।
এ যেন ত্যাগের পদত্যাগ ।
এক সময় দেশের শত্রুদের হানাদার, রাজাকার বলে গালি দিয়ে
মনে এক ধরনের তৃপ্তি অনুভব করতাম।
কিন্তু আজ
যারা স্বাধীন দেশের গর্বের পতাকায় কালিমা লাগাচ্ছে,
যারা নিরীহ মানুষকে পেট্টোল বোমায় পুড়ায়ে জয়োৎসব করছে,
যারা ঘুষ বাণিজ্যে অর্থের পাহাড় গড়ে গরিবে পেটে লাথি মারছে,
যারা গুম ,খুন আর দখলদারিতে ত্রাসের রাজ্যে রাজা বনে গেছেন,
যারা নীতির “ন” মানেন না অথচ নীতির বচনে মুখর,
তাদের জন্য ঘৃনা ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নাই।
কারন,
আমি অপদার্থ, আমি কুলাঙ্গার, জীবন থেকেও জড়।
না হয়-
এত অন্যায়, অবিচার, অনিয়ম দেখেও অন্ধের মতো অবিচল। কেন?
আমি নিরুপায় হয়ে মিনতি করি,
আবার জাগিয়ে দে মা তোর সেই সন্তানদের,
যাদের ত্যাগের বিনিময়ে
অন্যায়, অবিচার, অনিয়ম ভেঙ্গে চুরে হবে একাকার,
গড়বে সুশাসন, আর তা রক্ষায় লড়বে আজীবন।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
শহৗদের মহান ত্যাগের বিনিময় তুল্য কিছু নেই। বিশ্ববাসী শ্রদ্ধাভরে স্মরন করছে কিন্তু কতিপয় কুলাঙ্গারের জন্য আমরা শহীদদের সম্মানে এতটুকু আঘাত হানতে দিতে পারিনা । তবে তা যেন হয় শুধু সম্মান বোধ হতে। লোক দেখানোর জন্য না হয়।
০৬ আগষ্ট - ২০১৯
গল্প/কবিতা:
৩৫ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“জানুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।
প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী